ডিজিটাল নাগরিকের জন্য সংযোগ
কয়েক বছর আগে রাজশাহীর এক গ্রামে গিয়েছি। সেখানে সদ্যই টুজি নেটওয়ার্ক কভারেজ পৌঁছেছে। এক তরুণ আমাকে জানাল, নেটওয়ার্কের একটি মাত্র দাগ পেতে হলে তাকে তেঁতুল গাছের মগডালে উঠতে হয়। তারপর কল করা বা মেসেজ পাঠানো যায়।
কয়েক সপ্তাহ পরেই সেখানে আরেকটা মোবাইল টাওয়ার বসানোর পর দেখা গেল, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা ফোরজি কভারেজ পেতে শুরু করেছে। বিশ্বের বহু অঞ্চলে যে পরিবর্তনটা ডায়াল আপ বা ব্রডব্যান্ডের মতো নানা ধাপ পেরিয়ে এসে হয়, রাজশাহীতে সেটি এক নিমিষে ঘটে গেল।
এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এসব পরিবর্তন হচ্ছে একদম রাতারাতি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত গতিতে, প্রায় ৮ শতাংশ হারে। সমাজ পরিবর্তনের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। সবচেয়ে বড় কথা, ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর অগ্রগতিও খুব অর্থপূর্ণ। যেখানে লাইব্রেরি পর্যন্ত নেই, সেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহূর্তেই যে কোনো তথ্য জানার সুযোগ থাকছে। কিংবা ইঁটের দেয়ালের কামরা ছাড়াই তৈরি হচ্ছে ভার্চুয়াল অফিস। টাকা লেনদেনে লাগছে না ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। আশেপাশে হাসপাতাল না থাকলেও দুশ্চিন্তা নেই, অসুখ-বিসুখে ডাক্তারের পরামর্শ মিলছে অনলাইনেই। সবচেয়ে বড় কথা, যোগাযোগ রক্ষার জন্য তেঁতুল গাছের মগডালে চড়ার দরকার হচ্ছে না।
সংযুক্ত থাকার সুবিধাটি যদিও বড় রকম আশীর্বাদ, কিন্তু এর সুফল সবাই সমানভাবে ভোগ করতে পারে না। এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইন্টারনেটের এই অবিশ্বাস্য প্রসারকে সবার জন্য কার্যকর করতে হলে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও জনগোষ্ঠীকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব হচ্ছে, সমাজের বেশিরভাগ মানুষ যেন গোটা বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার সুবিধাগুলো পুরো মাত্রায় নিতে পারে।